ট্রান্সজেন্ডার কর্তৃক শিক্ষকদের হত্যার হুমকী, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতিবাদ সমাবেশ

সম্প্রতি সিলেট মেট্রোপলিটন ইউনিভার্সিটির বহিষ্কৃত ট্রান্সজেন্ডার শিক্ষার্থী সাফওয়ান চৌধুরি রেবিল কর্তৃক আলোচিত শিক্ষক ড. মোহাম্মদ সরোয়ার হোসেন এবং আসিফ মাহতাব উৎসকে হত্যার হুমকী প্রদান করা হয়। অন্যান্য ট্রান্সজেন্ডার ও সমকামী অ্যাক্টিভিস্টরাও এই হুমকীদাতার পক্ষে দাঁড়ায়। এর প্রতিবাদে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা প্রতিবাদ সমাবেশের আয়োজন করেন।
সোমবার (১৮ আগস্ট ২০২৫) দুপুর ১২ টা ৩০ মিনিটে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় বুদ্ধিজীবী চত্বরে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা চবিয়ান দ্বীনি পরিবারের ব্যানারে ড. মোহাম্মদ সরোয়ার হোসেন ও আসিফ মাহতাব উৎসকে হত্যার হুমকি ও এলজিবিটি সন্ত্রাসের প্রতিবাদে মানববন্ধন।
মানববন্ধনে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক বলেন, 'বিশ্ববিদ্যালয় গুলোতে যারা এলজিবিটি ও সমকামিতার মতো বিকৃত মতবাদ প্রচার করে, পাশ্চাত্য বিকৃত মতবাদের পক্ষে অবস্থান নেয়, মূল্যবোধের বিপক্ষে কাজ করে - তারাই আজ বুদ্ধিবৃত্তিক জগতে প্রতিষ্ঠিত। অন্যদিকে মূল্যবোধে পক্ষে কাজ করা, বিকৃতির প্রতিবাদ করা শিক্ষকগণকে কর্মক্ষেত্রে এবং বুদ্ধিবৃত্তিক ময়দানে কোনঠাসা করে রাখা হয়েছে। আমাদের সহকর্মীদের মাথা কেটে ফুটবল খেলার হুমকী দেওয়া হচ্ছে। আর আমাদের বুদ্ধিজীবীরা ভাবছেন আমরা তো ভালোই আছি। পলাশির যুদ্ধে যখন জাতীয় বিপর্যয় হচ্ছিলো, তখন বুদ্ধিজীবীরা ভাবছিলো আমরা তো ভালোই আছি। এখানে দাঁড়িয়েই আমার শতাধিক সহকর্মী বলেছে যে আমরা শেখ হাসিনার পক্ষে আছি, আমরা শান্তি চাই, আমরা সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে। আমরা পরিষ্কার করে বলতে চাই, আমরা এসব বিকৃত চিন্তাধারী এলজিবিটিকিউ মতবাদকে ঠেকাবো, ইন এভরি পসিবল অয়ে। এই আন্দোলন একটা স্ফুলিঙ্গ। ছোট্ট বারুদ থেকে যেমন দাবানল গড়ে ওঠে, আমাদের আন্দোলনও ছড়িয়ে পড়বে, ইনশাআল্লাহ। আমরা কখনো থামিনি, আর থামবোও না, ইনশাআল্লাহ। আমাদের সহকর্মীদের যারা হুমকী দিয়েছে, তাদেরকে নিঃশর্ত ক্ষমা চাইতে হবে। সেই সাথে অবিলম্বে এইসব হুমকীদাতাকে আইনের আওতায় আনতে হবে।'
মানববন্ধনে বিআরএফ ইয়ুথ ক্লাবের কোষাধ্যক্ষ ও চবির ভূগোল ও পরিবেশ বিদ্যা বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আজিজুর রহমান আব্দুল্লাহ বলেন, 'সিলেট মেট্রোপলিটন ইউনিভার্সিটির বহিষ্কৃত ট্রান্সজেন্ডার সন্ত্রাসী সাফওয়ান চৌধুরি রেবিল কর্তৃক বিশিষ্ট গবেষক আইইউবির অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর ড. মোহাম্মদ সরোয়ার হোসেন এবং জুলাইয়ের অগ্রসেনানী মানারাত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির শিক্ষক আসিফ মাহতাব উৎস স্যারকে হত্যার হুমকী প্রদান করা হয়। কিছু তথাকথিত বিশিষ্ট নাগরিক আবার এই সন্ত্রাসী জঙ্গির পক্ষে অবস্থান নিয়েছে। যা বিদ্যমান আইনে সুস্পষ্ট শাস্তিযোগ্য অপরাধ। অথচ প্রশাসন এখনো নিষ্ক্রিয়। তাদের এই নিষ্ক্রিয়তা আমাদের অবাক করছে। রাষ্ট্র কী তাহলে সমকামী সন্ত্রাসীদের পক্ষে? আপনার সন্তান ট্রান্সজেন্ডার বা সমকামী হলে আপনি মেনে নিবেন? আপনি মানলেও আমরা মানবো না। মূল্যবোধের পক্ষে আমাদের অবস্থান সুদৃঢ় থাকবে, ইনশাআল্লাহ।'
জুলাই স্মৃতি সংরক্ষণ পরিষদের কেন্দ্রীয় মুখপাত্র ও ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের শিক্ষার্থী সৈয়ব আহমেদ সিয়াম বলেন, 'আমরা বাংলাদেশের ট্র্যাডিশনাল পরিবার ব্যবস্থাকে টিকিয়ে সংগ্রাম করছি। আমাদের সংগ্রাম আপনার সন্তানের সুন্দর ভবিষ্যতের জন্যই। আমরা চাই না, আপনার সন্তান সমকামী বা ট্রান্সজেন্ডার হোক। আমরা চাই না, আপনার সন্তান এইচআইভিতে আক্রান্ত হোক। মূল্যবোধের পক্ষে সংগ্রামরত আমাদের দুই সম্মানিত শিক্ষক ড. মোহাম্মদ সরোয়ার হোসেন ও আসিফ মাহতাব উৎস স্যারকে এলজিবিটি সন্ত্রাসীদের পক্ষ থেকে হত্যার হুমকি প্রদান করা হয়েছে। কিছু তথাকথিত বুদ্ধিপাপী আবার সেই সন্ত্রাসীর পক্ষে অবস্থান নিয়েছে। প্রশাসনের নিরবতা আমাদের বিচলিত করছে। আমরা আজকের মানববন্ধন থেকে তিনটি দাবী পেশ করছি। এক. হুমকীদাতা ও প্রশ্রয়দাতাদের অবিলম্বে আইনের আওতায় আনতে হবে। দুই. ট্রান্সজেন্ডার ও এলজিবিটিকিউদের মানসিক চিকিৎসার মাধ্যমে সুস্থ জীবনে ফেরানোর উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। তিন. বাংলাদেশে সমকামিতা ও ট্রান্সজেন্ডার প্রোমোটকারী সকল ব্যক্তি ও সংগঠনকে বিচারের মুখোমুখি করতে হবে। প্রয়োজনে মূল্যবোধ সংরক্ষণে কঠোর আইন প্রণয়ন করতে হবে।'
মানববন্ধনে আরো উপস্থিত ছিলেন ইসলামী ছাত্র আন্দোলন চবি শাখার সভাপতি আব্দুর রহমান, চবিয়ান দ্বীনি পরিবারের শূরা সদস্য শাহাদাত চৌধুরী ও মঈন উদ্দীন চিশতি সহ অন্যান্য সদস্যবৃন্দ।
মানববন্ধনে শিক্ষার্থীরা 'আমরা সবাই সরোয়ার, মারবি তোরা কত আর?', 'সমকামিতার আমদানি, রক্তের সাথে বেঈমানি', 'সমকামিতার স্বীকৃতি, অধিকার নয় বিকৃতি', 'ব্যক্তির জন্য অধিকার, বিকৃতির জন্য প্রতিকার' ও 'আওয়াজ উঠা বাংলাদেশ, ইস্ট ইন্ডিয়া ছাড়বে দেশ' প্রভৃতি স্লোগান দেন।
Related News
ইবির ১৯ শিক্ষককে শোকজ
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) ১৯ শিক্ষককে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকারীদের হুমকি, গালাগালি ও ভয়ভীতি প্রদর্শন করায় কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। সোমবার(১৮ আগস্ট) বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. মনজুরুল হক বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
শিক্ষা ক্যাডারে লোকপ্রশাসন বিভাগ অন্তর্ভুক্তির দাবিতে ইবি শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন
বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (বিসিএস) শিক্ষা ক্যাডারে লোকপ্রশাসন বিভাগ অন্তর্ভুক্তির দাবিতে মানববন্ধন করেছেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) শিক্ষার্থীরা। রবিবার (১৭ আগস্ট) সকাল সাড়ে ১১টায় মীর মোশাররফ হোসেন ভবনের সামনে এই কর্মসূচি পালন করেন তারা। এরপর শিক্ষার্থীরা সেখান থেকে মিছিল নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে গিয়ে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করেন।
ইবির রক্তিমার নেতৃত্বে সোহরাব ও ফারহানা
সামাজিক ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন রক্তিমার ২০২৫-২৬ সেশনের জন্য ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) শাখার আংশিক কার্যনির্বাহী কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। এতে সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন আল ফিকহ্ অ্যান্ড 'ল বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী সোহরাব উদ্দিন আহম্মেদ এবং সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন একই শিক্ষাবর্ষের লোক প্রশাসন বিভাগের ফারহানা আফরিন।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রী চতুর্থ কাউন্সিল অনুষ্ঠিত
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে (১২ আগস্ট ২০২৫) বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রী, চবি শাখার উদ্যোগে ৪র্থ কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার বেলা বারোটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বুদ্ধিজীবী চত্বরে এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয় ।